কলকাতা জাতীয় গ্রন্থাগার মেম্বারশিপ পশ্চিমবঙ্গ [ ন্যাশনাল লাইব্রেরি ]

প্রাচীন কাল থেকেই ভাষা মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে এসেছে। এটি মনের ভাব প্রকাশের সর্ব বৃহৎ মাধ্যম । ভাষা তার পরিপূর্ণ রূপ পায়, বইয়ের পাতায়। আর বই এবং বইপ্রেমীদের প্রাণ কেন্দ্র হল গ্রন্থাগার। ব্রিটিশ শাসন কাল থেকেই কলকাতা জাতীয় গ্রন্থাগার বহু ইতিহাস এর সাক্ষী হয়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাই , ভারতের একমাত্র আন্তর্জাতিক বইমেলার শহর, তাই ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগার যে এই শহরেই থাকবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Read in English:- National Library Kolkata [Museum]

কলকাতা গ্রন্থাগার পশ্চিমবঙ্গ
কলকাতা গ্রন্থাগার পশ্চিমবঙ্গ

কলকাতা জাতীয় গ্রন্থাগার [ ন্যাশনাল লাইব্রেরি কলকাতা ] – National Library Kolkata

ন্যাশনাল লাইব্রেরি যাওয়ার সব থেকে সহজ রাস্তা হলো, Exide বা রবীন্দ্র সদন মেট্রো স্টেশন থেকে আলিপুর চিড়িয়া খানা যাওয়ার যেকোনো বাস ধরা। যেমন ২৬০, ২৩০ ইত্যাদি । ১৫ /২০ মিনিট সময় লাগবে। এছাড়াও বালিগঞ্জ থেকে ১ নং বাস করে ডাইরেক্ট চিড়িয়াখানা আসা যায় । আর হাজরা ক্রসিংথেকে আলিপুর এর অটো পাবেন। আলিপুর চিড়িয়াখানায় এসে ১ মিনিট হাঁটলেই ন্যাশনাল লাইব্রেরি পৌঁছে যাবেন।

আলিপুর এর দ্রষ্টব্যঃ স্থান গুলি হলো চিড়িয়া খানা, ফিশ একুয়ারিয়াম , ন্যাশনাল লাইব্রেরি, এগ্রি হর্টিকালটারাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি র পাশে আছে এগ্রি হর্টিকালটারাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া। যেটি আলিপুর ভবানী ভবন থেকে পায়ে হাটা ২ মিনিটের রাস্তা। এটি ১৮২০ সালে ব্রিটিশ উইলিয়াম কেরি সাহেবের হাতে প্রতিষ্ঠিত । প্রত্যেক বছর জানুয়ারী ১স্ট উইক & ফেব্রুয়ারী ২ন্ড উইক এ এখানে উইন্টার ফ্লাওয়ার শো ও অ্যানুয়াল ফ্লাওয়ারএক্সিবিশন হয়।

কলকাতা জাতীয় গ্রন্থাগার

কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগার

কলকাতার দক্ষিণে আলিপুর চিড়িয়াখানার বিপরীতে সুবিশাল অঞ্চল নিয়ে জাতীয় গ্রন্থাগার অবস্থিত । এই গ্রন্থাগার ভবন ও সংলগ্ন এলাকাটির পোশাকি নামবেলভেডিয়ার এস্টেট। বেলভেডিয়ার এস্টেট নিজেও একটি হেরিটেজ ভবন এবং এর সাথে জড়িয়ে আছে নানান ঐতিহাসিক ও রোমহর্ষক কাহিনী! প্রায়একশো তিরিশ একর জমি নিয়ে তৈরি হয়েছে ভারতের সর্ববৃহৎ ও সরকারি এই গ্রন্থাগারটি।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি তে ঢুকলেই সামনে দেখতে পাবেন একটি পোস্ট অফিস , ডান দিক ধরে সোজা এগোলেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। বর্তমান এটি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া আর অধীনে।

পড়ুন :- মেটকাফ টাউন হল মিউজিয়াম কলকাতা

কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের ইতিহাস

১৮৩৬ এর ২১শে মার্চ হেয়ার স্ট্রিট আর স্ট্র্যাণ্ড রোডের সংযোগস্থলে অবস্থিত মেটক্যাফে হলে স্থাপিত হয় কলকাতার প্রথম লাইব্রেরি, যা ‘ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি’ নাম পরিচিত। ১৯৫৩ এর ১লা ফেব্রূয়ারি মেটক্যাফে হল থেকে বর্তমানের আলিপুরের বেলভেডিয়ার এস্টেটে স্থানান্তরিত হয় । গ্রন্থগারটি এখন পুরোনো বিল্ডিং টি ছেড়ে ভাষা ভবন এ স্থানান্তরিত হয়েছে।

জাতীয় গ্রন্থাগার – ভাষা ভবন

বর্তমানে এই গ্রন্থাগারের সম্পত্তি ২৬,৪১,৬১৫ টি বই, ৮৮,১৬২ টি ম্যাপ, ৩,২৩১ টি পুঁথিও পাণ্ডলিপি, ১,৪৭,৩৩১ টি সাময়িক পত্রপত্রিকা, অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত যাবতীয় বিখ্যাত দৈনিক সংবাদপত্রের প্রতিদিনের সংস্করণ, ২১,২৫০ টি ডিজিটাইজড্ বই ও অন্যান্য দুষ্প্রাপ্য নথি।

এছাড়া বহু প্রাচীন নথি মাইক্রো ফিল্মিংয়ের মাধ্যমে সংরক্ষিত আছে। ভাষা ভবনের মেন রিডিং হলে একসাথে বসতে পারেন ৫৫০ জন। জাতীয় গ্রন্থাগারভারত সরকারের একমাত্র প্রতিষ্ঠন যা খোলা থাকে বছরের ৩৬২ দিন। শুধুমাত্র প্রজাতন্ত্র দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও গান্ধী জয়ন্তীতে বন্ধ থাকে জাতীয় গ্রন্থাগারের দরজা।

কলকাতা জাতীয় গ্রন্থাগার
কলকাতা জাতীয় গ্রন্থাগার

ন্যাশনাল লাইব্রেরির টাইমিং

  • সোমবার থেকে শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত।
  • শনিবার আর রবিবার সকাল ৯.৩০টা থেকে রাত ৬ পর্যন্ত।

কোলকাতা ন্যাশনাল লাইব্রেরি মেম্বারশিপ

ন্যাশনাল লাইব্রেরি তে দু ধরণের কার্ড করার ব্যবস্থা আছে টেম্পোরারি ও পার্মানেন্ট

পার্মানেন্ট কার্ড টি করতে হলে ফর্ম ফিল আপ করে কাউন্সিলর / গেজেটেড অফিসার ইত্যাদি দের কাছ থেকে সিগ্নেচার করা আবশ্যিক।

আর টেম্পোরারি কার্ড এর ভ্যালিডিটি একদিন। এই কার্ড করা তে হলে একটি পরিচয় পত্র হলেই যথেষ্ট। সকাল ৮ টা থেকে রাত ৯ টা অবধি সমস্ত ধরণের বই পড়ার সুযোগ পাবেন।

ভাষা ভবন এর রিসেপশন এ গেলেই এই সম্পর্কে আপনি সব তথ্য পাবেন প্রসঙ্গত বলে রাখি ন্যাশনাল লাইব্রেরি তে ঢুকতে গেলে একটি পরিচয় পত্র অবশই নিয়ে আস্তে হবে।

ভাষা ভবন এর ভিতরে কোনো প্রিন্টেড কপি বা জেরক্স কপি এলাও নয়। ভিতরে ছবি তোলা নিষিদ্ধ। ব্যাগ লাগেজ কাউন্টার এ রাখতে হবে। ফোন সাইলেন্ট মোড এ রাখতে হবে।

পড়ুন :- পুরুলিয়া অযোধ্যা পাহাড় ভ্রমণ গাইড

কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি মিউজিয়াম

ন্যাশনাল লাইব্রেরির পুরোনো বিল্ডিং টি সাজিয়ে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে। মিউজিয়াম টি দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম অংশ টি তে অনেক পুরোনো স্টোন স্ক্যাপচার ও ছবি আছে এবং দ্বিতীয় অংশ তে যেটি আগে বল রুম ছিল সেখানে এখন অডিও ভিজ্যুয়াল মিউসিয়াম হয়েছে।

এই ডিজিটাল মিউজিয়াম টি সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ তা অবধি খোলা থাকে। এই মিউজিয়াম টি সোমবার বন্ধ থাকে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি ক্যান্টিন

ন্যাশনাল লাইব্রেরি তে দুটি ক্যান্টিন আছে। একটি ভাষা ভবন এর বাইরে আর অন্য টি হলো মিউজিয়াম এর পাশে। এখানে চা কফি স্ন্যাক্স সবসময় ই পাওয়া যায়। চা এর দাম ১ টাকা। অর্ডার দিলে দুপুরের খাবার ও পাওয়া যায় ক্যান্টিন ৯ টা থেকে ৬ টা অবধি খোলা থাকে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা কে ?

উইলিয়াম কেরি সাহেবে ১৮২০ সালে কোলকাতা ন্যাশনাল লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠা করেন।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি যাওয়ার ম্যাপ
ন্যাশনাল লাইব্রেরি যাওয়ার ম্যাপ

আপনার কাছ থেকে আরো ৫ সেকেন্ড চাইছি এই আর্টিকেল টি শেয়ার করার জন্য।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।