৭৭ তম ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ২০২৪ | ১৫ আগস্টের ইতিহাস

প্রথমেই বলে রাখা দরকার আমরা ৭৬ বছর হলো স্বাধীন হয়েছি, কিন্তু আজ আমাদের ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস। আর ১৯৪৭ সালে ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা পাওয়ার পর আমরা ৭৭ বছর অতিক্রম করেছি।

১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্ত হয়ে পরাধীন ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। বঞ্চিত, নিপীড়িত ও শোষিত ভারতীয়দের স্বপ্নসাধ পূরণের একটি গরীয়ান দিন হলো ভারতের স্বাধীনতা দিবস (Indian Independence Day)।

স্বাধীনতা মানে শৃঙ্খল ও শোষণ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে অগ্রসর হওয়া এবং নিজস্ব চিন্তাধারা প্রকাশের সুযোগ লাভ। বহু বীর রক্তের বিনিময়ে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ মহান ভারতের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।

পড়ুন:- সমস্ত ভ্রমণ গন্তব্য গুলি

ভারতের স্বাধীনতা দিবস
ভারতের স্বাধীনতা দিবস

ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস

১৭শ শতাব্দীতে বাণিজ্যের উদেশ্যে ইউরোপীয় বণিকেরা ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছিলেন। ১৮শ শতাব্দীতে সামরিক শক্তির মাধ্যমে, ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থানীয় রাজ্যগুলির সাথে লড়াই করে নিজের শক্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের দ্বারা বাংলায় ব্রিটিশ শাসন শুরু হয়। ১৮৫৭ সালের ২৯ শে মার্চ ব্যারাকপুরে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের পরই ১৮৫৮ সালে পাস হয় ভারত শাসন আইন। এই আইন দ্বারা ভারতের শাসনভার ব্রিটিশ স্বহস্তে তুলে নেন।

২৮ শে  ডিসেম্বর ১৮৮৫ সালে বোম্বাইয়ের গোকুল দাস তেজ পাল সংস্কৃত কলেজে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয়। রাউলাট আইন, মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইন এর মধ্যে পাস হয়। অহিংসা অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয় গান্ধীজির নেতৃত্বে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগের নেতৃত্বে উত্থান হয় মুসলিম জাতীয়তাবাদের।

১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট ভারতীয় স্বাধীনতা আইনের দ্বারা ভারতবর্ষের বিভাজনের মাধ্যমে ভারতবাসী স্বাধীনতা লাভ করে।

পড়ুন:- ৫ দিনের গিরিডি মধুপুর দেওঘর ভ্রমণ গাইড কলকাতা থেকে

ভারতবর্ষ
ভারতবর্ষ

পড়ুন:- আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস | মে দিবস

ভারতের স্বাধীনতা  দিবস কি ভাবে পালিত  হয়?

প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পুরানো দিল্লির লাল কেল্লায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং সমস্ত ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। ১৫ ই আগস্ট সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সম্মানে ছোঁড়া হয় একুশটি বন্দুকের গুলি।

রাষ্ট্রের রাজধানীগুলিতে মুখ্যমন্ত্রীরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। চ্যানেল দূরদর্শনে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়। এই দিনটি সারা ভারত জুড়ে জাতীয় ছুটি হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।

পড়ুন:- বকখালি ভ্রমণ গাইড

লাল কেল্লা দিল্লী
লাল কেল্লা দিল্লী

বিদেশে ভারতের স্বাধীনতা দিবস কি ভাবে পালন করা হয়?

ভারতীয় প্রবাসীরা বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেন। যে অঞ্চলে অনেক বেশি ভারতীয় বসবাস করেন যেমন – নিউ ইয়র্ক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলিতে ১৫ ই আগস্ট দিনটি পালন করা হয়। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই দিনটিকে “ভারত দিবস” বলা হয়।

পড়ুন:- ৩ দিনের বোলপুর শান্তিনিকেতন ভ্রমণ ও দর্শনীয় স্থান এর গাইড

স্বাধীনতার পূর্বে ভারতের স্বাধীনতা দিবস

১৯২৯ সালে জাতীয় কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে “পূর্ন স্বরাজ ঘোষণাপত্র ” বা  “ভারতের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র” গৃহীত হয়, এবং ২৬ শে জানুয়ারি তারিখটিকে স্বাধীনতা দিবস রূপে ঘোষণা করা হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকারকে স্বাধীনতা অনুমোদনে বাধ্য করার জন্য একটি স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

১৯৩০ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত ২৬ শে জানুয়ারি তারিখটি কংগ্রেস স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করেছিলেন। সেই সময় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সভার আয়োজন করা হত এবং সেই সব সভায় আগত ব্যক্তিবর্গ “স্বাধীনতার শপথ” গ্রহণ করতেন। জওহরলাল নেহেরু তাঁর আত্মজীবনীতে এই শান্তিপূর্ণ সভাগুলিকে বর্ণনা করেছেন।

মহাত্মা গান্ধী সভার পাশাপাশি এই দিনটিতে আরও কিছু করার পরিকল্পনা করেন। চরকা কেটে, ‘অস্পৃশ্য’দের সেবা করে, হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির আয়োজন ও আইন অমান্য করে ইংরেজ শক্তির বিরোধিতা করেন। 

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ২৬ শে জানুয়ারি তারিখটি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

পড়ুন:- কলকাতা দুর্গা পূজা

 ভারতের স্বাধীনতা

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা এবং বন্টনের পূর্বে ব্রিটিশ কর্তৃক প্রযোজ্য আইন

  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশ কর্তৃক প্রযোজ্য আইন গুলির মধ্যে অন্যতম হল: 

  1. পাঁচশালা বন্দোবস্ত ১৭৭২, লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
  2. রেগুলেটিং অ্যাক্ট ১৭৭७, লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
  3. দশশালা বন্দোবস্ত ১৭৯০, লর্ড কর্ণওয়ালিশ
  4. চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত (বাংলা) ১৭৯৩, লর্ড কর্ণওয়ালিশ
  5. অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি, ১৭৯৮ লর্ড ওয়েলেসলি
  6. সতীদাহ নিবারণ আইন ১৮২৯, লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক
  7. স্বত্ব বিলোপনীতি  ১৮৪৮, লর্ড ডালহৌসী
  8. উডের শিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১৮৫৪,    লর্ড ডালহৌসী
  9. বিধবা বিবাহ আইন  ১৮৫৬, লর্ড ক্যানিং
  10. মহারানীর ঘোষণাপত্র    ১৮৫৮, লর্ড ক্যানিং
  11. ভারত-শাসন আইন    ১৮৫৮, লর্ড ক্যানিং
  12. ইন্ডিয়ান পেনাল কোড    ১৮৫৮,  লর্ড ক্যানিং
  13. নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রন  আইন   ১৮৭৬, লর্ড লিটন
  14. ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট মাতৃভাষায় সংবাদপত্র আইন   ১৮৭৮,    লর্ড লিটন
  15. আর্মস (অস্ত্র) অ্যাক্ট ১৮৭৮, লর্ড লিটন
  16. ইলবার্ট বিল ১৮৮৩, লর্ড রিপন
  17. সংবাদপত্র আইন ১৯০৮, লর্ড মিন্টো
  18. ইন্ডিয়ান প্রেস অ্যাক্ট ১৯১০,  লর্ড হার্ডিঞ্জ
  19. ভারত রক্ষা আইন  ১৯১৫, লর্ড হার্ডিঞ্জ
  20. রাওলাট অ্যাক্ট  ১৯১৯, লর্ড চেমসফোর্ড
  21. ভারত সরকার আই (মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার) ১৯১৯, লর্ড আর উইন
  22. সাইমন কমিশন   ১৯১৯, লর্ড আরউইন
  23.  সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা  ১৯৩২, লর্ড উইলিংডন
  24. ভারত শাসন আইন ১৯৩৫, লর্ড উইলিংডন
  25. ক্রিপস মিশন ১৯৪২, লর্ড লিনলিথগো
  26. ওয়াভেল পরিকল্পনা  ১৯৪৫,  লর্ড ওয়াভেল
  27. ক্যাবিনেট মিশন ১৯৪৬,  লর্ড ওয়াভেল
  28.  ভারতের স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭, লর্ড মাউন্টব্যাটেন

পড়ুন:- জাতীয় শিশু দিবস । ভারত বাংলাদেশ ও অনন্য

ভারতের বন্টন ও তার ইতিহাস

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতবর্ষকে দুটি স্বতন্ত্র অধিরাজ্যে বিভক্ত করেছিল। দুটি অধিরাজ্য হলো ভারত ও পাকিস্তান। ভারত বর্তমান সময়ে ‘ভারতীয় প্রজাতন্ত্র’ এবং পাকিস্তান ‘ইসলামি ধর্মালম্বী প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তান ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ হিসাবে পরিচিত। বিভাজনটি অমুসলিম বা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে হয়েছিল।

বিভাজনের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, সিভিল সার্ভিস, রেল ও কোষাগারও বিভক্ত হয়ে যায়। এর পরে ভারতে অবসান ঘটে ব্রিটিশ শাসনের। ১৯৪৭ সালের ১৪ ই অগাস্ট এবং ১৫ ই আগস্ট দুটি স্ব-শাসিত দেশ ভারত ও পাকিস্তান অস্তিত্ব লাভ করে।

এই বন্টনের ফলে ২ কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। পূর্বে ও পরে প্রাণহানির ঘটনা সহ বড় আকারে দেখা যায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। যা আজও এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলে।

১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়। ভারতের প্রশাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বার্মা (মায়ানমার) ও সিংহল (শ্রীলঙ্কা) স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়।

 ১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

পড়ুন:- মার্বেল প্যালেস কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ | সাথে আরো ৬ টি জায়গা

ভারতের স্বাধীনতা দিবসের গান

স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও স্বাধীনতা দিবসে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর ‘বন্দে মাতরম’ (Vande Mataram lyrics)এর সুরের সঙ্গে যদিও কোনও গানের তুলনা হয় না, তবুও বহু গান ভারতীয়ের মুখে গুন গুন করে ভেসে আসে। এরূপ গানগুলি হলো যা স্বাধীনতা দিবসের দিন ঘরে ঘরে বাজতে থাকে “ও আমার দেশের মাটি”,”সারে জাহান সে আচ্ছা”, “ধন ধন্য পুষ্পে ভরা”, “একবার বিদায় দে মা”।

পড়ুন:- পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বড় জেলা

ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নেহেরুর বক্তব্য 

১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করেন জওহরলাল নেহেরু। তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লির লাল কেল্লার লাহোরি গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী  জওহরলাল নেহেরু লাল কেল্লায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।

ভারতের গঠনমূলক একতা, দেশ ও রাজ্য শাসন, ভারতবাসীর নিরাপত্তা, সমাজ ব্যবস্থা, সংখ্যালঘু দের নিরাপত্তা, সকলের জন্যে সমতা ইত্যাদি তাঁর বক্তব্যে বিশেষ ভাবে প্রকাশ পেয়েছিল।

পরবর্তীতে ভারতের প্রস্তাবনায় তাঁর অব্জেক্টিভ রেসলিউশন সর্বসম্মত ভাবে মেনে নেওয়া হয়। ১৪ ই নভেম্বর পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু-র জন্মজয়ন্তী ‘শিশু দিবস’ হিসাবে পালিত হয়।

ভারতের স্বাধীনতা দিবস
ভারতের স্বাধীনতা দিবস

ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ

সিপাহি বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলে মনে করা হয়। ১৮৫৭ সালের ১০ ই মে মিরাট শহরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর সিপাহিরা বিদ্রোহ শুরু করে । ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এনফিল্ড নামের এক ধরণের রাইফেল নিয়ে আসে। এতে এক বিশেষ কার্তুজ ব্যবহার করা হত। কার্তুজের খোল দাঁতে করে ছিঁড়ে বন্দুকে গুলি ভরতে হত । পিচ্ছিলকারক পদার্থ এই কার্তুজের সঙ্গে ব্যবহার করা হত যা গোরু, শুকর সহ অন্যান্য পশুর চর্বি থেকে তৈরি।

কোম্পানীর হিন্দুদের সৈন্য কাছে গরু খুব পবিত্র এবং মুসলিমদের কাছে শুকর প্রবল ভাবে বর্জনীয় ছিল। হিন্দু, মুসলিম সবাই এতে ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে  বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।

মঙ্গল পান্ডের হাত ধরে ভারতে এই সংগ্রাম শুরু হয়। তাঁতিয়া টোপি, নানাসাহেব, ঝাঁসির রানি লক্ষ্মী বাঈ এর মতো নেত্রীবৃন্দ যুদ্ধে যোগ দেন। এই যুদ্ধে ইংরেজদের জয় হলেও ইংরেজদের মনে ভীতির সঞ্চয় ঘটিয়েছিল।

পড়ুন:- কোলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর মেলা ভ্রমণ গাইড

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধীজীর ভূমিকা

মহাত্মা গান্ধী ভারতের প্রধান রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণ বৈষম্যএর বিরুদ্ধে সরব হয়ে ৯ ই জানুয়ারি ভারতে ফিরে আসেন। ৯ ই জানুয়ারি দিনটিকে তাই প্রবাসী ভারতীয় দিবস বলা হয়।

এর পর ১৯১৫ সালে আমেদাবাদের সবরমতি নদীর তীরে মহাত্মা গান্ধী একটি আশ্রম তৈরী করেছিলেন ও  তিনি সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। অহিংস মতবাদ ছিল এই আন্দোলনের চালিকা শক্তি। তিনি বিহারের চাম্পারণে, আমেদাবাদে, গুজরাটের খেদাই সত্যাগ্রহ আন্দোলন করে সফল হয়েছিলেন। 

১৯২৯ সালে ২৩ শে ডিসেম্বর জাতীয় কংগ্রেস এর লাহোর অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধী ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করেন। ব্রিটিশ এই দাবি না মানলে তিনি আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন।

১৯৩০ সালে  ১২ মার্চ গান্ধীজি ইংরেজদের লবণ করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন। তিনি ডান্ডি লবণ কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন, এবং  ডান্ডি পদযাত্রা বা লবন সত্যাগ্রহ শুরু হয় ১৯৪২ সালে ৮ আগস্ট বোম্বের সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির অধিবেশনে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন।

২ রা অক্টোবর গান্ধীজির  জন্মদিন, ভারতে  জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।

রাষ্ট্রসংঘের সভায় ২ রা অক্টোবর-কে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

মহাত্মা গান্ধী
মহাত্মা গান্ধী

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদ 

১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের সময় থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিদের হাত থেকে ভারতবর্ষকে রক্ষা করে স্বাধীন ভারত গড়তে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন বহুমানুষ। ছিলেন মাষ্টার দা সূর্য সেন ও । তিনি চট্টগ্রামকে মুক্ত করার জন্য গঠন করেন চট্টগ্রাম বিপ্লবী বাহিনী বা চিটাগাঙ রিপাব্লিক্যান আর্মি। ১৯৩৩ সালে তিনি গ্রেপ্তার হন, ৯ ই আগষ্ট তাঁর ফাঁসি হয় এবং তাঁর দেহ  বঙ্গোপসাগরের জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

বিনয় বাদল দিনেশের নাম ভারতবাসীর মনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। ১৯৩০ সালে ৮ই ডিসেম্বরএ রাইটার্স বিল্ডিং ঢুকে অত্যাচারী ইংরেজ জেনারেল সিস্মসন কে হত্যা করেন।

১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহে বেগম হজরত মহল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এছাড়াও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদ হয়ে ছিলেন মঙ্গল পান্ডে, ক্ষুদিরাম বসু, ভগৎ সিংহ, বিনয়-বাদল-দীনেশ, প্রীতিলতা ওয়াদেদ্দার, প্রমুখ ব্যক্তিগণ।

পড়ুন:- পুরুলিয়া অযোধ্যা পাহাড় ভ্রমণ গাইড

ভারতের বিপ্লবী আন্দোলন

ভারতের বিপ্লবী স্বাধীনতা আন্দোলন গুপ্ত সমিতির দ্বারা পরিচালিত হতো। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে পুলিনবিহারী দাসের নেতৃত্বে ঢাকায় ‘ঢাকা অনুশীলন সমিতি’ গঠন করা হয়। যার সদস্য সংখ্যা ছিল ৮০ জন। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বিপ্লবী আন্দোলনের মুখ্য নায়ক ছিলেন যুগান্তর দলের অরবিন্দ ঘোষ। পরে তাঁকে আন্দামান সেলুলার জেলে পাঠানো হয়।

১৫ ই আগস্ট কেন স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয় ?

১৯২৯ সালে জাতীয় কংগ্রেসএর সভাপতি থাকাকালীন জওহরলাল নেহরু পূর্ণ স্বরাজের ডাক দিয়েছিলেন। এই  দিন  ২৬ শে  জানুয়ারিতে স্বাধীনতা দিবস উয্যাপনের কথা হয়।  ১৯৩০ সাল থেকে এই ২৬ শে  জানুয়ারি দিনটিতেই  স্বাধীনতা দিবস পালন করতেন কংগ্রেসএর নেত্রীবৃন্দ।  ১৯৫০ সালে ওই দিনটিকেই প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে ঘোষণা করা  হয়। 

লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন  ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আদেশপত্র দিয়েছিলেন ৩০ রা জুন, ১৯৪৮-এর মধ্যে  ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা উল্লেখ করেছিলেন। সি রাজাগোপালাচারী মাউন্ট ব্যাটেনএর কাজ ১৯৪৭ সালের অগাস্টে শেষ করার আর্জি জানান এবং  তা সম্পন্ন করা হয়।

 মাউন্ট ব্যাটেন বলেছিলেন,  তিনি দাঙ্গা ও রক্তপাত এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেন। মাউন্ট ব্যাটেনএর আদেশে ভারতের স্বাধীনতা বিল ১৯৪৭ সালের ৪ ঠা জুলাই দু সপ্তাহের মধ্যে পাশ হয়। ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয় ভারতবর্ষ।

ভারতের স্বাধীনতায় নেতাজির ভূমিকা

সুভাষচন্দ্র বসু এবং আজাদ হিন্দ বাহিনী ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। আই. সি. এস. কৃত ছাত্র সুভাষচন্দ্র বসু রাজনীতির সঙ্গে ছাত্রজীবন থেকে যুক্ত। প্রেসিডেন্সি কলেজে ভারত বিদ্বেষী আচরণের কারণে, তিনি প্রথম ইংরেজ সরকারের প্রতি বিদ্বেষের পরিচয় দিয়েছিলেন।

১৯২০ খ্রিস্টাব্দে আই. সি. এস. পরীক্ষাতে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। তরপর তিনি ইংরেজদের চাকরি প্রত্যাখ্যান করে ভারতে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। পরে সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেসে যোগ দিলেও গান্ধিজির সঙ্গে মতবিরোধ হয় এবং ত্রিপুরী কংগ্রেস অধিবেশনে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ২৯ শে জানুয়ারি অধিবেশন ত্যাগ করেন।  

কংগ্রেসের সভাপতির পদ ত্যাগ করে ৩রা মে গড়ে তোলেন ‘ফরোয়ার্ড ব্লক’ দল। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে ফরওয়ার্ড ব্লক দল ও বামপন্থী গোষ্ঠীর সমন্বয় গঠন করেন নিখিল ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক (All India Forward Bloc)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুভাষচন্দ্র বসু ভারত রক্ষা করার জন্য ও ব্রিটিশ বিরোধিতার জন্য কারারুদ্ধ হন। পরে অসুস্থতার জন্য এলগিন রোডে নিজ বাসায় নজরবন্দি করে রাখা হয়। 

পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে ছদ্মনামে তিনি প্রথম কাবুলে যান। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ২৮ শে মার্চ বার্লিনে বন্দি ভারতীয়দের নিয়ে রাসবিহারী বসুর প্রচেষ্টায় আজাদ হিন্দ বাহিনী গড়ে তোলেন। ভারতের মুক্তি সংগ্রামে তারা প্রাণ পর্যন্ত বিসর্জনের প্রতিশ্রুতি দেন।

তাঁর নেতৃত্বে জাপানি সাহায্যপুষ্ট আজাদ হিন্দ বাহিনী ব্রিটিশ সেনাকে বাধ্য করেন পিছু হটতে। আন্দামান ও নিকোবরএ দুটি দ্বীপপুঞ্জ ‘শহিদ দ্বীপ’ ও ‘স্বরাজ দ্বীপ’ নামকরণ করেন নেতাজি। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে ৪ ই জানুয়ারি বার্মায় সামরিক ঘাঁটি গড়েন। 

তিনি ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ১৯ শে মার্চ কোহিমায় ভারতের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি টোকিওর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। পথে বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু সংবাদ রটনার ঘটনা আজাদ হিন্দ বাহিনীকে পরাজিত করেছিল। 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের ভূমিকা

ভারতীয় স্বাধীনতার ইতিহাসে সাহসিনী নারীরাও পিছিয়ে ছিলেন না। এই সব অসামান্য নারীরা ছিলেন:

রানি লক্ষ্মী বাঈ 

 ১৮৪২ সালে ঝাঁসির মহারাজ এর সঙ্গে মণিকর্ণিকা বা রানি লক্ষ্মী বাঈ এর বিবাহ হয়। তাঁদের শিশুপুত্র দামোদর রাও এবং এক দত্তক পুত্র ছিল। রাজা এবং দামোদর রাওএর মৃত্যুর পর লর্ড ডালহৌসি রানির দত্তক পুত্রকে রাজা হিসেবে মানতে রাজি হলেন না।

তাই ১৮৫৮-এর কোটাহ-কী-সেরাই-এর যুদ্ধে ইংরেজদের বিরুদ্ধে রানী অস্ত্র তুলে নেন। স্যার হিউ রোজ়ের নেতৃত্বে ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে ঘোড়ার পিঠে চড়ে যুদ্ধ করে ব্রিটিশ সেনার হাতে প্রাণ বিসর্জন দেন এই বীর কন্যা।

সরোজিনী নাইডু

হায়দ্রাবাদের বাঙালি পরিবারে জন্মেছিলেন ‘দ্য নাইটিঙ্গেল অফ ইন্ডিয়া’। গোবিন্দারাজুলু নাইডুকে ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করেন। তিনি ভারতের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় মহিলা প্রেসিডেন্ট। তিনি ছিলেন কবি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী। দু’বার জেলেও হয় তাঁর। তিনি Women’s Indian Association তৈরি করেন।

মাতঙ্গিনী হাজরা

১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের কাঁথি থানার সামনে ব্রিটিশ বিরোধী অহিংস আন্দোলনের সর্বাগ্রে জাতীয় পতাকা হাতে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন এই গ্রামীণ নারী মাতঙ্গিনী হাজরা।

বীণা দাস 

বাঙলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে গুলি ছুঁড়ে ধরা পড়েন বীণা দাস। এই কারণে কারাদণ্ড হয় তাঁর।

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার

মাস্টারদা সূর্য সেনের বিপ্লবী সংঘের বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ করেন। রক্ষীদের আঘাতে আহত হয়ে পরে পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে তিনি মৃত্যু বরণ করেন৷

অরুণা আসফ আলি

 ১৯৩২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে তিহার জেলে বন্দি হন তিনি এবং বন্দিদের চিকিৎসার দাবি করে আন্দোলন শুরু করলে পরবর্তী পর্যায়ে ব্রিটিশ শক্তি তা মানতে বাধ্য হন।

অ্যানি বেসান্ত

নারী অধিকার আন্দোলনকারী, লেখক অ্যানি বেসান্ত ভারতে কেন্দ্রীয় হিন্দু স্কুল এবং হায়দ্রাবাদএ (সিন্ধু) জাতীয় কলেজিয়েট বোর্ড প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছিলেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে অংশগ্রহণ করেন এবং ১৯১৭ সালে জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি হন।

মুসলিম স্বাধীনতা সংগ্রামী

দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে নাম লেখা স্বাধীনতা যোদ্ধার ৯৫৩০০ জন এর মধ্যে ৬১৯৪৫ জন মুসলিম বীর। হায়দার আলী ও তার পুত্র ব্রিটিশ আগ্ৰাসকদের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন।

প্রথম মুসলিম মহিলা বেগম হযরত মহল স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম পথিক। তিনি স্যার হেনরি লরেন্সকে গুলি করেন। বিপ্লবী বীর আশফাকুল খানকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে ফাঁসি দেওয়া হয়। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ জাতীয় কংগ্রেসের মুসলিম নেতা ও সভাপতি ছিলেন ।

পড়ুন:- পরেশনাথ জৈন মন্দির কলকাতা

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালিদের ভূমিকা

ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বাঙালির ইতিহাস গৌরবোজ্জ্বল ভাবে প্রকাশিত :

অরবিন্দ ঘোষ

অরবিন্দ ঘোষ ভারতীয় বাঙালি রাজনৈতিক নেতা।  তিনি  ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাংলা ও মধ্য প্রদেশে ভ্রমণ করে বিপ্লবী দলগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করেন। তিনি  বিপ্লবী দলগুলোকে সংগঠিত করার কাজ করতেন।

ক্ষুদিরাম বসু

ক্ষুদিরাম বসু ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডএর গাড়িতে বোমা ছুঁড়েছিলেন। ফলে মিসেস কেনেডি ও তার কন্যার মৃত্যু হয়। এই কাজে তাঁর সঙ্গী ছিলেন প্রফুল্ল চাকি। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

যতীন্দ্র নাথ দাস

যতীন্দ্র নাথ দাস লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ১৯২৯ সালের ১৪ই জুন গ্রেপ্তার হন। জেলবন্দী অবস্থায় ৬৩ দিন অনশনের পর জেলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

বটুকেশ্বর দত্ত

বটুকেশ্বর দত্ত ছিলেন উনিশ শতকের একজন বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা। ভগৎ সিংয়ের সাথে দিল্লীর কেন্দ্রীয় সংসদ ভবনে বোমা ফাটানোর জন্য ইংরেজ সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। 

বিপিনচন্দ্র পাল

বিপিনচন্দ্র পাল ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর আহ্বানে বহু যুবক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ।

নিকুঞ্জ সেন

বিপ্লবী নিকুঞ্জ সেন ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষ স্থাপিত বিপ্লবীদের গুপ্ত সমিতি যুগান্তর দলের ‘মুক্তি সংঘ’ এর সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। পরে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ‘বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স’ এর সদস্য হন। কুমিল্লার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মি.স্টিভেন্সকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত তিনি ছিলেন।

অতুলচন্দ্র ঘোষ

অতুলচন্দ্র ঘোষ লোকসেবক সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে অসহযোগ আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়েন। লবণ-সত্যাগ্রহে ও পরে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য  ১৯৪৫ সালে কারারুদ্ধ হন। ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি লোকসেবক সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন।

মনোরন্জন গুপ্ত

মনোরঞ্জন গুপ্ত ছিলেন  ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী। তিনি সরস্বতী লাইব্রেরি স্থাপন করেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে রাজবন্দি হিসাবে সাড়ে চার বছর জেলে আটক থাকেন। ১৯২১ খৃস্টাব্দে অসহযোগ আন্দোলনকালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন তাঁর উপর বরিশালের আন্দোলন সংগঠনের ভার অর্পণ করেন। ডা. নারায়ণ রায় প্রমুখের চেষ্টায় ইউরোপিয়ানদের ক্লাবে বোমা ফেলে  তিনি আতঙ্কিত করেন ইংরেজদের দেশ ছাড়া জন্য। 

সত্য গুপ্ত

হেমচন্দ্র ঘোষের গুপ্ত সমিতির সভ্য ছিলেন সত্য গুপ্ত। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে আগস্ট লোম্যান হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে পরে মুক্তি পান। কিন্তু ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ই ডিসেম্বর বিনয় বসু বাদল গুপ্ত এবং দীনেশ গুপ্ত কর্তৃক রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণের ঘটনায় রাজবন্দি হন।

বিরসা মুন্ডা

বিরসা মুন্ডা হলেন  একজন মুন্ডা  সমাজ সংস্কারক। তিনি  মুন্ডা বিদ্রোহের সূচনা করেন। বিদ্রোহের পরে তাঁর ফাঁসির হুকুম হয়। পরে রাঁচি জেলে খাদ্যে বিষ প্রয়োগের ফলে বিরসা মুন্ডার মৃত্যু ঘটে।

ভারতের জাতীয় পতাকা

২৪টি দণ্ডযুক্ত নীল রঙের অশোকচক্র  গেরুয়া, সাদা ও সবুজ এই তিনটি রঙ নিয়ে  ভারতের আয়তাকার  জাতীয় পতাকা তৈরী করা হয়েছে।. ১৯৪৭ সালের ২২ শে জুলাই গণপরিষদের অধিবেশনে পতাকার নকশাটি গ্রহণ করা হয়। তারপর এটি ১৫ ই আগস্ট সরকারি স্বীকৃতি পায়।  

ভারতীয় জাতীয় পতাকা “তেরঙা” নামে অভিহিত হয়।  ভারতীয় কংগ্রেসের পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়ার “স্বরাজ” পতাকার আদলে নির্মিত হয় জাতীয় পতাকা।  জাতীয় পতাকা তৈরি হয় খাদি কাপড়ে।  এখনও ভারতের একমাত্র ‘কর্ণাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ’ ​জাতীয় পতাকা উৎপাদনকারী সংস্থা।

ভারতীয় পতাকাবিধি আইন দ্বারা স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসের ছাড়া অন্য দিনে জাতীয় পতাকার ব্যবহার নিষেধ আছে। 

পড়ুন:- জয়দেব কেন্দুলী মেলা বীরভূম

ভারতের জাতীয় পতাকা
ভারতের জাতীয় পতাকা

ভারতের স্বাধীনতা দিবস হয় কত সালে এবং কবে ?

১৫ ই অগাস্ট ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শক্তির থেকে মুক্ত হয়ে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে।

২০২২ সালে ভারতের কততম স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে?

২০২২ সালের ১৫ ই অগাস্ট ভারতে ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম শহীদ কে হয়েছিলেন?

মঙ্গল পাণ্ডে হলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম শহীদ।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্ব কনিষ্ঠ শহীদ কে হয়ে ছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্ব কনিষ্ঠ শহীদ হলেন ক্ষুদিরাম বোস।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম মহিলা শহীদ কে?

কনকলতা বড়ুয়া হলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম বিপ্লবী নারী শহীদ।

ভারতের জাতীয় প্রতীক কি?

অশোকের সিংহ চতুর্মুখ স্তম্ভশীর্ষ হলো ভারতের জাতীয় প্রতীক।

ভারতের স্বাধীনতা আইন কত সালে প্রণীত হয়?

ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭ সালের ১৮ই জুলাই রাজকীয় সম্মতি পায়।

Kolkata to Darjeeling

আপনার কাছ থেকে আরো ৫ সেকেন্ড চাইছি এই আর্টিকেল টি শেয়ার করার জন্য।

One Comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।