ফোর্ট উইলিয়াম হেরিটেজ ওয়াক, কোলকাতা | সমস্ত তথ্য
চলুন আজ আপনাদেরকে নিয়ে যাই কোলকাতার অন্যতম রেস্ট্রিকটেড এরিয়ায় যেখানে খুব সহজে কেউ ই ঢুকতে পারে না। তবে বেশ কিছুদিন ধরে ফোর্ট উইলিয়ামে চালু হয়েছে হেরিটেজ ওয়াক /ট্যুর (Fort William Heritage Walk Kolkata) যেখানে আমার আপনার মত সাধারণ নাগরিকদেরকেও ফোর্ট উইলিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
যেহেতু ফোর্ট উইলিয়ামের ভিতরে ছবি তোলা বা ভিডিও করা মানা, তাই এই ভিডিওতে খুব একটা বিশেষ কিছু দেখাতে পারব না তবে সমস্ত ইনফরমেশনই পেয়ে যাবেন, যেমন কিভাবে যাবেন? কত টাকা খরচা? কতক্ষণ ভেতরে থাকতে পারবেন? কটা থেকে শুরু হয় ? সপ্তাহের কোন দিনে যেতে পারবেন ইত্যাদি।
ফোর্ট উইলিয়াম হেরিটেজ ওয়াক কোলকাতা
ফোর্ট উইলিয়াম কিভাবে সহজে পৌঁছানো যায়?
আমরা ভোরবেলা যাদবপুর ৮বি থেকে E1 বাসে করে পার্ক স্ট্রিট পৌঁছলাম থেকে ৬৫০ মিটারর দূরত্বেই পড়ে ফোর্ট উইলিয়াম গুগল ম্যাপ টা দেখে নিলেই বুঝতে পারবেন। আর যারা খিদিরপুর বা আকাশবাণী ভবন হয়ে আসবেন তারা একেবারেই ফোর্ট উইলিয়ামের সামনেই নামতে পারবেন।
পড়ুন :- আধুনিক পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিচিতি ও সমস্ত তথ্য
ফোর্ট উইলিয়াম হেরিটেজ ট্যুর এর প্রবেশ মূল্য কত? কিভাবে বুক করা যায়?
ফোর্ট উইলিয়াম হেরিটেজ টুডে প্রবেশ মূল্য ৩৫০ টাকা পার হেড। স্টুডেন্টদের কোন ফি লাগে না এবং আট বছরের নিচে বাচ্চাদেরও কোন চার্জ নেই । এই ৩৫০ টাকার মধ্যেই সামান্য খাওয়া-দাওয়া ব্যবস্থা ও আছে।
প্রথমে ওনাদেরকে মেল ([email protected] ) করতে হয়েছিল তারপরে ওনারা একটি অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়েছিলেন সেই নাম্বারে আমরা SBI নেট ব্যাঙ্কিং থেকে কুইক ট্রান্সফার করে পেমেন্ট করেছিলাম।
কবে এবং কখন ফোর্ট উইলিয়ামের এই হেরিটেজ ট্যুর টি করানো হয়?
প্রতি রবিবার ফোর্ট উইলিয়াম হেরিটেজ ট্যুর টি করানো হয়। গ্রীষ্মকালে মানে এপ্রিল থেকে অক্টোবর সকাল সাড়ে ছটা থেকে শুরু হয়, আর শীতকালে মানে সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সাড়ে আটটা থেকে এই টুরটি চলে। সদস্য সংখ্যা যদি ৩৫ এর বেশি হয়ে যায় তাহলে ট্যুর দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় প্রত্যেক গ্রুপেই একটি করে গাইড ও থাকেন যিনি ফোর্ট উইলিয়ামের ভিতরে কোথায় কি আছে খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দেন।
পুরো ট্যুর টি হেঁটে হয় , ৪ ঘন্টার মতো সময় লাগে। সিনিওর সিটিজেন দের কেউ যদি হেঁটে ক্লান্ত হয়ে পড়েন , তার জন্য টোটোর ব্যাবস্থাও আছে। আধার কার্ড এবং জেরক্স সঙ্গে রাখতে হবে। জলের বোতল ছাতা টুপি ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে পারবেন।
ফোর্ট উইলিয়ামের ভিতরে কি করা উচিত নয়?
- ছবি তোলা একেবারেই নিষিদ্ধ তবে ঢোকার মুখে ওনারা সামান্য এলাও করেন। তবে পুরো টুরটাতেই ফোর্ট উইলিয়ামের একজন সদস্য সমস্ত ছবি তোলেন। পরে মেল করলে সেই ছবিগুলি আবার পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
- এখানে স্লিপার, হাফ প্যান্ট, থ্রি কোয়াটার প্যান্ট ইত্যাদি এলাও নয় . প্রপার ফর্মাল ড্রেস এ আসতে হবে।
- ১৫ মিনিট আগে আপনাকে রিপোর্ট করতে হবে, ট্যুর চালু হয়ে গেলে আর কাউকে এলাও করা হয় না।
ফোর্ট উইলিয়াম হেরিটেজ ওয়াক এর জায়গা গুলি
ফোর্ট উইলিয়াম হেরিটেজ ওয়াক এ আপনারা যে জায়গা গুলি দেখানো সেগুলি হয় :-
- বিজয় স্মারক
- ডালহৌসি ব্যারাক
- সেন্ট পিটার্স চার্চ
- কিচেনার হাউস
- ইস্টার্ন কমান্ড লাইব্রেরী
- ইস্টার্ন কমান্ড মিউজিয়াম ইত্যাদি
বিজয় স্মারক
ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব গেটের ডানদিকে অবস্থিত এই স্মৃতিস্তম্ভটি রেড রোড থেকেও দেখা যায়। চীন-ভারত সংঘর্ষ এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এ শহীদ কমান্ড দের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এর উদ্দেশে 1996 সালে তৈরি হয়েছিল।
ডালহৌসি ব্যারাক
এই সুন্দর সাদা বিল্ডিংটি 1856 সালে নির্মিত হয়েছিল, এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে তিন দিনের জন্য বন্দী হিসাবে রাখা হয়েছিল।
সেন্ট পিটার্স চার্চ এবং ইস্টার্ন কমান্ড লাইব্রেরী
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ট্রিনিটি হলের বিখ্যাত চ্যাপেলের সাদৃশ্যে তৈরি করা হয়েছে সেন্ট পিটার্স চার্চ।বর্তমানে এই সেন্ট পিটার্স চার্চটিকেই ইস্টার্ন কমান্ড লাইব্রেরী হিসাবে তৈরি করা হয়েছে
এই মিউজিয়ামটিতে ৬৪ টি বিরল বইসহ প্রায় ৩৫ হাজার বইয়ের একটি বিশাল সংগ্রহালয় আছে.
কিচেনার হাউস
১৭৭১ সালে নির্মিত হয়েছিল কিচেনার হাউ বর্তমানে এই ভবনটি অফিসারদের গেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ইস্টার্ন কমান্ড মিউজিয়াম
এই মিউজিয়ামের ভেতরে ফোর্ট উইলিয়ামের আর্কিটেকচারাল ম্যাপ,বিভিন্ন ছবি, তখনকার পতাকা, আত্মসমর্পণের বিভিন্ন ধরনের উপকরণ, ককপিটের ভাঙ্গা অংশ, বন্দুক গোলাবারুদ থেকে শুরু করে বহু ধরনের জিনিস খুব ভালোভাবে সংরক্ষিত করা হয়েছে।
আমহার্স্ট হাউস, এখানেই নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ কে ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের সময় বন্দি করে রাখা হয়েছিল।
এছাড়াও নানা পুরনো স্থাপত্য ওয়াক টি মাধ্যমে আপনারা দেখতে পাবেন পুরনো অনেক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকতে পারবেন।
আপনার যাত্রা শুভ হোক
এখানে মিনিমাম কতোজন যাওয়া যায়?
১ জন ও যেতে পারেন।