Hanuman Chalisa in Bengali PDF, MP3 | হনুমান চালিশা বাংলা

শ্রী হনুমান চালিসা বাংলা, “জয হনুমান জ্ঞান গুণ সাগর” (Hanuman Chalisa in Bengali PDF, MP3,VIDEO, LYRICS ডাউনলোড), হনুমানের উদ্দেশ্যে রচিত একটি হিন্দু ভক্তিমূলক স্তোত্র বা স্তব। এই মন্ত্রটি আওয়াধি ভাষায় তুলসীদাস রচনা করেছিলেন। রামচরিতমানস ছাড়াও তুলসীদাস এর  সর্বাধিক পরিচিত গ্রন্থ হলো হনুমান চালিসা। বেঙ্গালীতে বা বাংলা ভাষায় হনুমান চালিশা জপ করার জন্য এই আর্টিকেল টি পড়তে পারেন।

“চালিসা” শব্দটি “চালিস” থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যার অর্থ হিন্দিতে চল্লিশ নম্বর, কারণ হনুমান চালিসায় ৪০ টি শ্লোক রয়েছে (শুরুতে দোহা “শ্রী গুরু চরণ সরোজ রজ নিজমন মুকুর সুধারি” এবং শেষে দু’টি বাদ দিয়ে)।

হিন্দুদেবতা হনুমান, ভগবান রামের ভক্ত, হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র। শৈব ঐতিহ্য অনুসারে, হনুমানও ভগবান শিবের অবতার। ভগবান হনুমানের গুণাবলী ছিল তার শক্তি, সাহস, প্রজ্ঞা, ব্রহ্মচর্য, ভগবান রামের প্রতি ভক্তি। ভারতবর্ষের হিন্দুদের মধ্যে প্রবল বিশ্বাস আছে যে হনুমান চালিসা জপ করলে গুরুতর বহু সমস্যাগুলি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

হনুমান চালিশা বাংলা Hanuman Chalisa in Bengali
হনুমান চালিশা বাংলা – Hanuman Chalisa in Bengali

হনুমান চালিশা কি?

বাংলা ভাবানুবাদে হনুমান চালিসা হলো ভগবান হনুমানের প্রশংসায় ভরা ৪০ টি শ্লোক নিয়ে গঠিত। হনুমান শব্দটি ভগবান হনুমানের নামকে নির্দেশ করে এবং চালিসা শব্দটি ৪০ টি শ্লোককে বোঝায় যা এই ভক্তিমূলক স্তোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এই স্তোত্রগুলি ভগবান হনুমানকে উৎসর্গ করা সবচেয়ে জনপ্রিয় হিন্দু ভক্তিমূলক স্তোত্রগুলির মধ্যে একটি।

ভগবান হনুমানের প্রশংসায় এই ভক্তিমূলক স্তোত্রটি ১৬ শতকের কবি এবং সাধক তুলসীদাস লিখেছেন বলে মনে করা হয়, যিনি রামচরিতমানস লেখার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। হনুমান চালিসা অবধি ভাষায়  রচিত। হিন্দির এই উপভাষাটি ভগবান রামের জন্মস্থান অযোধ্যায় কথা বলা হয় ।

Jai bajrangbali
Jai Bajrangbali

শ্রী হনুমান চালিশা বাংলা | পঞ্জিকাতে মন্ত্র পাঠ, গান ও অনুবাদ

দোহা

শ্রী গুরু চরণ সরোজ রজ নিজমন মুকুর সুধারি ।

বরণৌ রঘুবর বিমলযশ জো দাযক ফলচারি ॥

বুদ্ধিহীন তনুজানিকৈ সুমিরৌ পবন কুমার ।

বল বুদ্ধি বিদ্যা দেহু মোহি হরহু কলেশ বিকার ॥

ধ্যানম্

গোষ্পদীকৃত বারাশিং মশকীকৃত রাক্ষসম্ ।

রামাযণ মহামালা রত্নং বংদে-(অ)নিলাত্মজম্ ॥

যত্র যত্র রঘুনাথ কীর্তনং তত্র তত্র কৃতমস্তকাংজলিম্ ।

ভাষ্পবারি পরিপূর্ণ লোচনং মারুতিং নমত রাক্ষসাংতকম্ ॥

জয় হনুমান জ্ঞান গুণ সাগর |

জয় কপীশ তিহু লোক উজাগর || ১

রামদূত অতুলিত বলধামা |

অংজনি পুত্র পবনসুত নামা || ২

মহাবীর বিক্রম বজরঙ্গী |

কুমতি নিবার সুমতি কে সঙ্গী || ৩

কংচন বরণ বিরাজ সুবেশা |

কানন কুংডল কুংচিত কেশা || ৪

হাথবজ্র ঔ ধ্বজা বিরাজৈ |

কাংথে মূংজ জনেবূ সাজৈ || ৫

শংকর সুবন কেসরী নন্দন |

তেজ প্রতাপ মহাজগ বন্দন || ৬

বিদ্য়াবান গুণী অতি চাতুর |

রাম কাজ করিবে কো আতুর || ৭

প্রভু চরিত্র সুনিবে কো রসিয়া |

রামলখন সীতা মন বসিয়া || ৮

সূক্ষ্ম রূপধরি সিয়হি দিখাবা |

বিকট রূপধরি লংক জরাবা || ৯

ভীম রূপধরি অসুর সংহারে |

রামচংদ্র কে কাজ সংবারে || ১০

লায় সংজীবন লখন জিয়ায়ে |

শ্রী রঘুবীর হরষি উরলায়ে || ১১

রঘুপতি কীন্হী বহুত বডায়ী |

তুম মম প্রিয় ভরতহি সম ভায়ী || ১২

সহস বদন তুম্হরো য়শগাবৈ |

অস কহি শ্রীপতি কণ্ঠ লগাবৈ || ১৩

সনকাদিক ব্রহ্মাদি মুনীশা |

নারদ শারদ সহিত অহীশা || ১৪

য়ম কুবের দিগপাল জহাং তে |

কবি কোবিদ কহি সকে কহাং তে || ১৫

তুম উপকার সুগ্রীবহি কীন্হা |

রাম মিলায় রাজপদ দীন্হা || ১৬

তুম্হরো মন্ত্র বিভীষণ মানা |

লংকেশ্বর ভয়ে সব জগ জানা || ১৭

য়ুগ সহস্র য়োজন পর ভানূ |

লীল্য়ো তাহি মধুর ফল জানূ || ১৮

প্রভু মুদ্রিকা মেলি মুখ মাহী |

জলধি লাংঘি গয়ে অচরজ নাহী || ১৯

দুর্গম কাজ জগত কে জেতে |

সুগম অনুগ্রহ তুম্হরে তেতে || ২০

রাম দুআরে তুম রখবারে |

হোত ন আজ্ঞা বিনু পৈসারে || ২১

সব সুখ লহৈ তুম্হারী শরণা |

তুম রক্ষক কাহূ কো ডর না || ২২

আপন তেজ তুম্হারো আপৈ |

তীনোং লোক হাংক তে কাংপৈ ||২৩

ভূত পিশাচ নিকট নহি আবৈ |

মহবীর জব নাম সুনাবৈ || ২৪

নাসৈ রোগ হরৈ সব পীরা |

জপত নিরংতর হনুমত বীরা || ২৫

সংকট সেং হনুমান ছুডাবৈ |

মন ক্রম বচন ধ্য়ান জো লাবৈ || ২৬

সব পর রাম তপস্বী রাজা |

তিনকে কাজ সকল তুম সাজা || ২৭

ঔর মনোরধ জো কোয়ি লাবৈ |

তাসু অমিত জীবন ফল পাবৈ || ২৮

চারো য়ুগ পরিতাপ তুম্হারা |

হৈ পরসিদ্ধ জগত উজিয়ারা || ২৯

সাধু সন্ত কে তুম রখবারে |

অসুর নিকন্দন রাম দুলারে || ৩০

অষ্ঠসিদ্ধি নব নিধি কে দাতা |

অস বর দীন্হ জানকী মাতা || ৩১

রাম রসায়ন তুম্হারে পাসা |

সদা রহো রঘুপতি কে দাসা || ৩২

তুম্হরে ভজন রামকো পাবৈ |

জন্ম জন্ম কে দুখ বিসরাবৈ || ৩৩

অংত কাল রঘুবর পুরজায়ী |

জহাং জন্ম হরিভক্ত কহায়ী || ৩৪

ঔর দেবতা চিত্ত ন ধরয়ী |

হনুমত সেয়ি সর্ব সুখ করয়ী || ৩৫

সংকট কটৈ মিটৈ সব পীরা |

জো সুমিরৈ হনুমত বল বীরা || ৩৬

জৈ জৈ জৈ হনুমান গোসায়ী |

কৃপা করো গুরুদেব কী নায়ী || ৩৭

জো শত বার পাঠ কর কোয়ী |

ছূটহি বন্দি মহা সুখ হোয়ী || ৩৮

জো য়হ পডৈ হনুমান চালীসা |

হোয় সিদ্ধি সাখী গৌরীশা || ৩৯

তুলসীদাস সদা হরি চেরা |

কীজৈ নাথ হৃদয় মহ ডেরা || ৪০

দোহা

পবন তনয় সঙ্কট হরণ – মঙ্গল মূরতি রূপ |

রাম লখন সীতা সহিত – হৃদয় বসহু সুরভূপ ||

সিয়াবর রামচন্দ্রকী জয় | পবনসুত হনুমানকী জয় | বোলো ভায়ী সব সন্তনকী জয় |।”

About Jai hanuman
About Jai Hanuman
Hanuman Chalisa in Bengali

শ্রী হনুমান চালিসা – জয় হনুমান জ্ঞান গুন সাগর মন্ত্র

জয় হনুমান জ্ঞান গুন সাগর (Jai hanuman gyan gun sagar) , শ্রী হনুমান চালিসার প্রতিটি শব্দ এতই কার্যকর যে প্রতিদিন ৭ বার, ১১ বার বা ১০৮ বার পাঠ করলে জীবনের প্রতিটি বাধা দূর হতে শুরু করে, প্রতিটি কর্মের পথ সহজ হয় এবং প্রতিটি কাজ সফল হয়।

হনুমান চালিসার ২১ শক্তিশালী  উপকারিতা বাংলা ভাষায়

গোস্বামী তুলসীদাস রচিত চালিসার অলৌকিক শক্তি রয়েছে যা আমাদের দুঃখকষ্ট দূর করে। হনুমান চালিসা পাঠের অলৌকিক উপকারিতা গুলি হলো:-

১. পারিবারিক কলহ থেকে মুক্তি

আপনার বাড়িতে পারিবারিক কলহের কোনো সমাধান না দেখলে হনুমান জির পূজা করুন। এখানে আপনি শুধুমাত্র শক্তি এবং আপনার বাড়ির কলহ শেষ করার উপায় পাবেন না। হনুমান চালিসা পাঠ করে আপনার মানসিক শক্তি দৃঢ় হবে এবং বিবাদের অবসান ঘটাবে।

২. নেতিবাচক শক্তি বন্ধ করার জন্য

চালিসার একটি শ্লোক “ভূত পিচাশ নিকাত নাহি আভেন, মহবীর জব নাম সুনাবৈ” ।

এর অর্থ হল – যে ব্যক্তি হনুমানের নাম করে, তাকে কোনো অশুভ আত্মা প্রভাবিত করতে পারে না, অর্থাৎ মন্দ চিন্তা তাকে ধরতে পারে না।

৩. বীর্য বৃদ্ধি ক্ষমতা লাভ

হনুমান জি সবচেয়ে শক্তিশালী পুরুষ হন তাঁর মনোযোগের কারণে ।  তাই মহাবীর এর নাম করলে মনোযোগের বৃদ্ধি ঘটে,  শক্তিশালী বীর্যযুক্ত পুরুষ হওয়া যায় ।

৪. প্রচেষ্টায় সাফল্য

“ভীম রূপ ধরি অসুর সানহারে, রাম চন্দ্রের কাজ সম্ভারে”

এই চৌপাইয়ের অর্থ হল, শ্রী রাম ও রাবণের যুদ্ধে হনুমানজি ভীমের রূপ ধারণ করেছিলেন, অর্থাৎ দৈত্য রূপ ধারণ করেছিলেন রাক্ষস ও অসুরদের বধ  করার জন্য ।

হনুমান জি শ্রীরামের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। যার দরুন শ্রীরামের সমস্ত কাজ সুসম্পন্ন হয়েছিল।

৫. ঘুমানোর আগে হনুমান চালিসা পাঠ করা উপকারী

যদি আপনার মন অস্থির থাকে, ঠিকমতো ঘুম না হয়, একা ঘুমাতে ভয় পান  তাহলে আপনি নিয়মিত হনুমান চালিসা পাঠ শুরু করুন।

ভালো ঘুম না হওয়ার একটা বড় কারণ মানসিক অস্থিরতা। হনুমান চালিসার পাঠ মানসিক শান্তি প্রদান করে এবং মনের অপ্রাসঙ্গিক চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়। হনুমান চালিসা পাঠ এর ফলে ব্যক্তি ভাল ঘুম হয়  এবং জীবনে উন্নতি করার সুযোগ বেড়ে যায় ।

৬. মঙ্গল গ্রহ রাশিকে শক্তিশালী করে

আপনার রাশিতে মঙ্গল দুর্বল দেখালে চিন্তার কিছু নেই। এর জন্য, আপনাকে শুধুমাত্র হনুমান চালিসা (Hanuman Chalisa) পাঠটি জপ করতে হবে কারণ এটি আপনার মঙ্গলকে শক্তিশালী করে তোলে। আপনি খ্যাতি, সমৃদ্ধি, শক্তি, এবং সুখ পাবেন ।

৭. শনি গ্রহের প্রভাব হ্রাস করুন

যদি কোনো ব্যক্তি শনির সংকটের সম্মুখীন হন, তাহলে সেই ব্যক্তির হনুমান চালিসা পাঠ করা উচিত। শনিদেব হনুমানকে ভয় পান। তাই যাদের কুণ্ডলীতে শনির অবস্থানের কারণে তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় , তাদের সেই  দোষ থেকে বাঁচতে চালিশা চোপাহী পাঠ করা উচিত। এতে তার জীবনে শান্তি আসে।

৮. আত্মবিশ্বাস তৈরি করুন

যদি কোন প্রকার সমস্যার সমাধান না হয়, অসুবিধা বা দুঃখ দূর না হয়, তাহলে এই চোপাহী টি পড়ুন। “অষ্ট সিদ্ধি নবনিধি কে দথা, আস বার দেন জানকী মাতা”।

এই চোপাহী টি ভিতর থেকে শান্তি দেয় এবং মানুষের মধ্যে আস্থা জাগায়। হনুমান চালিসা আপনার ব্যক্তিত্বের উন্নতি করতে সাহায্য করে এবং জীবনের সমস্ত সমস্যার সমাধান করে।

৯. রোগ নিরাময়

“নাসাই রোগ হারাই সাব-পিরা জপত নিরন্তর হনুমত বিরা”।

মহাবীর শ্রী হনুমান জির নাম জপ করলে রোগ নাশ হয় এবং সকল দুঃখ নাশ হয়।

লাই সঞ্জীবন লখন জিয়ায়ে শ্রী রঘুবীর হর্ষি।

যদি কোনও ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন এবং ওষুধেও কাজ না দেয়, তবে তাকে ভক্তি সহকারে এই লাইনটি পাঠ করতে হবে। এই লাইন জপ করলে কঠিন রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

১০. অশুভ শক্তি বিতরণ করা

হনুমান জি খুবই  শক্তিশালী দেবতা এবং তিনি কাউকে ভয় পান না । তিনি প্রতিটি মন্দ আত্মাকে ধ্বংস করেন এবং মানুষকে তা থেকে মুক্ত করেন।

যারা রাতে ভয় পান বা ভয়ের চিন্তা মাথায় আসে তাদের প্রতিদিন হনুমান চালিসা পাঠ করা উচিত।

১১. আপনার বুদ্ধি তীক্ষ্ণ করুন

যদি আপনার সন্তানের পড়া কিছু মনে না থাকে বা কাজ এ মন না বসে, তাহলে হনূমান চালিসা পড়তে হবে।

এই হনূমান চালিসা পড়ার ফলে তিনিও হনুমানজির মতো,  জ্ঞান, গুণ, চতুরতার পাশাপাশি শ্রী রামের আশীর্বাদ লাভ করবেন ।

১২. ঐশ্বরিক সুখের অনুভূতি

হনুমান চালিসা পাঠ করে, এক ঐশ্বরিক সুখ অনুভব করা যায়। যেমন “বিধান গুণী অতি চতুর, রাম কাজ করিবে কো আতুর” এখানে বলা হচ্ছে যে আপনি যখন অনুভব করেন যে আপনার বাড়িতে অশুভ আত্মার প্রাদুর্ভাব রয়েছে, তখন হনুমান চালিসা পাঠ করে, অশুভ আত্মাকে দূর করতে পারবেন। অশুভ আত্মারা সর্বদা হনুমানকে ভয় পায়।

১৩. পাপ থেকে মুক্তি পান

আমরা কখনও কখনও অনিচ্ছাকৃত বা অসচেতনভাবে ভুল করি। তবে আপনি চালিসা পাঠ করে ক্ষমা চাইতে পারেন।

১৪. নিরাপদ ভ্রমণ উপভোগ করুন

হনুমান চালিসা পাঠ করলে বা বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে পড়ে বেরোলে আপনার যাত্রা শুভ হবে। এছাড়াও, আপনার সাথে ভগবান হনুমানের একটি ছোট মূর্তি রাখুন। ভগবান হনুমান আপনার সঙ্গে থাকবেন আপনার যাত্রা শুভ হবে।

১৫. ইতিবাচক মনোভাব / অনুভূতি তৈরি

হনুমান চালিসার পাঠ আমাদের ইতিবাচক করে তোলে এবং বাজে ও খারাপ চিন্তাকে ধ্বংস করে এটি আমাদের আবেগ পরিবর্তন করে। মানসিক চাপের সময়ে দারুণভাবে সাহায্য করে।

১৬. মানসিক শক্তি

শারীরিক আরামের পাশাপাশি মানসিক বিশ্রামও খুব দরকার। মানসিক শান্তির বৃদ্ধির জন্য আমাদের উচিত এই ধ্যান করা। বিশ্বাস করুন যে হনুমান চালিসা পাঠ শুধুমাত্র ধর্মীয় এবং উপাসনার সাথে সম্পর্কিত নয়, এটি আপনাকে মানসিক প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল।

১৭. আধ্যাত্মিক জ্ঞান

হনুমান চালিসার ধ্যান করে আমরা ঐশ্বরিক আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভ করি। বস্তুগত আকাঙ্ক্ষা এবং পার্থিব আনন্দের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার মনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এর মন্ত্র জপ করুন।

১৮. সমস্ত ইচ্ছা পূরণ করতে

পূর্ণ ভক্তি ও ধ্যান সহকারে হনুমান চালিসা জপ বা শ্রবণ করলে, মানুষের সমস্ত অভিপ্রেত ইচ্ছা পূরণ হয়। চালিসার নিয়মিত পাঠ করলে ভগবান বজরংবলী জি (bajrangbali) আপনাকে  আশীর্বাদ করবেন এবং শক্তি প্রদান করবেন।

১৯. আর্থিক সংকট দূর করে

হনুমান জি অষ্টসিদ্ধি ও নবনিধির দাতা। যখনই আপনি আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হন, মনে মনে হনুমান জির ধ্যান করে এই চালিসা পাঠ করা শুরু করুন।

২০. অজানা ভয় দূর করে

অচেনা অপরিচিত কাউকে ভয় পেলে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে হাত-পা ধুয়ে পবিত্র চিত্তে হনুমান চালিসা পাঠ করা শুরু করুন। হনূমান চালিসা মন্ত্র থেকে জানা যায় যে, যে ব্যক্তি নিয়মিত এই চালিসা পাঠ করেন তার চারপাশে ভূত বা অন্যান্য নেতিবাচক শক্তি থাকে না।

২১. সিদ্ধি অর্জন

হনুমান চালিসা জপ বা শোনার উপকারিতা অসীম এবং অবিশ্বাস্য। গোস্বামীজী বলেছিলেন যে, সবারই  হনুমান চালিসা পড়া উচিত। তার  বর্ণনায় আছে , ‘হয় সিদ্ধি সখী গৌরিসা।’ বলার অর্থ এই যে, ভক্তি ও বিশ্বাসের সঙ্গে শ্রী চালিসা পাঠ করলে সিদ্ধি হয়।

হনুমান
শ্রী হনুমান

হনুমান চালিসা কে লিখেছেন?

হনুমান চালিসার রচয়িতা হলেন তুলসীদাস। তিনি একজন কবি ও সাধক ছিলেন।  তুলসীদাস খ্রিস্টীয় ১৬ শতকে হনুমান চালিসার রচনা করেন । স্তোত্রের শেষ স্তবকে তিনি তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন।

হনুমান চালিসার ৩৯ তম শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যে কেউ হনুমানের প্রতি পূর্ণ ভক্তি সহকারে শ্রী হনুমান চালিসা জপ করলে , তিনি হনুমানজীর  কৃপা পাবেন। হিন্দুদের মধ্যে প্রবল বিশ্বাস আছে যে হনুমান চালিসা জপ করলে গুরুতর বহু সমস্যাগুলি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

হনুমান চালিসা কখন লেখা হয়েছিল?

কবিও সাধক তুলসীদাস খ্রিস্টীয় ১৬ শতকে হনুমান চালিসার রচনা করেন । স্তোত্রের শেষ স্তবকে তিনি তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন।  হনুমান চালিসা হল হনুমানের প্রশংসায় একটি হিন্দু ভক্তিমূলক স্তোত্র। তুলসীদাস আওয়াধি ভাষায় এটি রচনা করেছিলেন। 

লোক মতে তুলসী দাস ভগবান শ্রী রামের দর্শন পান। তারপর তিনি দিল্লিতে তৎকালীন সম্রাট আওরঙ্গজেবের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সম্রাট তুলসী দাসকে শ্রী রাম দেখানোর জন্য আহ্বান করলেন। তুলসী দাস তখন উত্তর দিয়েছিলেন যে রামের প্রতি সত্যিকারের ভক্তি ছাড়া এটি সম্ভব নয়, তখন  আওরঙ্গজেব তুলসী দাস কে বন্দী করেন। আর সেই কারারুদ্ধ সময়েই তুলসী দাস হনুমান চালিসার সুন্দর শ্লোকগুলি রচনা করেছিলেন বলে মনে করা হয়।

তিনি যখন কারাগারে হনুমান চালিসার রচনা শেষ করেন, তখন শোনা যায়  বানরের একটি বাহিনী দিল্লি শহর এ উপদ্রব শুরু করে। রাজা তার বাহিনী দিয়ে বানরদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিফল হয়ে  অবশেষে, সম্রাট বুঝতে পেরেছিলেন যে বানরের আতঙ্কটি বানর ঈশ্বর হনুমানের ক্রোধের প্রকাশ ছিল। তিনি তুলসী দাসকে মুক্তি দেন এবং তাকে এবং বলা হয় যে তুলসীর মুক্তির পরপরই বানররা তাদের উপদ্রব বন্ধ করে দেয়।

তুলসী দাস হনুমান চালিসায় বলেছেন যে, যে কেউ হনুমানের প্রতি পূর্ণ ভক্তিভরে এটি জপ করলে, সে হনুমানের কৃপা পাবেই । 

তুলসীদাস, একজন হিন্দু কবি-সন্ত, একজন সংস্কারক এবং দার্শনিক ছিলেন। তিনি ভগবান রামের প্রতি ভক্তির জন্য পরিচিত। তিনি তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বারাণসীতে বসবাস করেছিলেন এবং বারাণসীর তুলসী ঘাট তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।

তিনি বারাণসীতে হনুমানকে উৎসর্গীকৃত সংকট মোচন হনুমান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বিশ্বাস করা হয় যে ওই স্থানে তিনি হনুমানের দর্শন পেয়েছিলেন।

হনুমান চালিশা বাংলা লিরিক্স
হনুমান চালিশা বাংলা ভাষায়

কোন তেল ভগবান হনুমানকে নিবেদন করা উচিত?

বাংলায় অর্থাৎ ওয়েস্ট বেঙ্গল এ ভগবান হনুমানকে সরিষার তেল ও কমলা রঙের সিঁদুর দেওয়া হয়। তবে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গাতেই হনুমান চালিসা পাঠের আগে ভগবান হনুমানকে সিঁদুর দিয়ে জেসমিন তেল (চামেলি) নিবেদন করা হয়।

হনুমান চালিসা কখন পাঠ করবেন?

হিন্দুদের মধ্যে হনুমান চালিসা মন্ত্র বিখ্যাত। হনুমান চালিশা পাঠ করার নিয়ম হলো, ব্রাহ্ম মুহুর্তে অর্থাৎ সকাল ৪ তে থেকে ৭ টার  মধ্যে স্নান করে পাঠ করতে হবে। তবে  আপনি হনুমান চালিসা মন্ত্র টি রাতের সময় ও পড়তে পারেন, ঘুমাতে যাওয়ার আগে।

হনুমান চালিসা এত শক্তিশালী কেন?

হনুমান চালিসা খুবই শক্তিশালী একটি মন্ত্র  কারণ, বলা হয় যে আপনি যখনই স্তোত্রটি পাঠ করবেন – শ্রীরাম জয়রাম জয়া জয়া রাম, ভগবান হনুমান তার  জপকারী ব্যক্তির সাহায্যে দ্রুত আসবেন। ভগবান রাম এবং মা সীতার প্রতি ভগবান হনুমানের ভক্তি অবশ্যই কিংবদন্তি। 

শ্রী রামের প্রতি ভগবান হনুমানের ভক্তি অতুলনীয়।  ভগবান রাম রাবনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সফল হওয়ার পর, অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনের পর, বিজয় উদযাপনের জন্য সকলকে উপহার দিয়েছিলেন। তখন শ্রী রাম নিজেকে হনুমানজির কাছে উপহার হিসাবে নিবেদন করেছিলেন।

ভগবান রাম হনুমানকে বলেছিলেন, “তুমি আমার জন্য যা কিছু করেছ তা কেবল অপরিমেয়। আমি চিরকাল তোমার কাছে ঋণী হয়ে থাকব। আমি আশীর্বাদ করি যে তুমি অমরত্ব লাভ কর এবং একজন “চিরঞ্জীব” হও। যারা আমার সামনে মাথা নত করে তাদেরও তোমার সামনে মাথা নত করতে হবে। যেখানেই রামের মহিমার কথা বলা হবে, সেই সব জায়গায় হনুমানের মহিমার কথাও বলা হবে।

আরো বলা হয় যে , ভগবান হনুমানকে “চিরঞ্জীবী” (অমর) নামে ডাকা হয়। ভারতে, ভগবান হনুমানকে প্রত্যেক ভক্ত জন খুবই বিশ্বাস ও  শ্রদ্ধা করে । মঙ্গলবার ও শনিবারে সারা দেশে হনুমান মন্দিরে বিশাল ভিড় দেখা যায়। 

দিনে কতবার হনুমান চালিসা পাঠ করবেন?

দিনে কতবার আপনি  হনুমান চালিসা পাঠ করবেন এই নিয়ে বিভিন্ন শাস্ত্রে বিভিন্ন মত  প্রকাশ পেয়েছে। অনেক সাধু – সন্ন্যাসী বলেন যে পঞ্চমুখী হনুমান চালিসা মন্ত্র বা শ্লোক দিনে এক (১) লক্ষ বার পাঠ করার কথা বলেন। আরো জানা যায় যে, এক (১) লক্ষ বার  দিনে হনুমান চালিসা মন্ত্র বা শ্লোক পথ করলে আপনি সিদ্ধি লাভ করবেন।

তবে সাধারণত বাজরংবলীর ভক্তরা প্রতিদিন 7 বার করে হনুমান চালিসা জপ করেন।

মহিলারা কি হনুমান চালিসা পড়তে পারবেন?

হ্যাঁ নারী, পুরুষ, সকল বয়সের ভক্ত সবাই হনুমান চালিসা পড়তে পারেন। তাই তুলসীদাশ লিখেছেন “জো ইয়ে পড়ে হনুমান চালিসা হোয়ে সিধি গোরিসা।” মানে যারা পড়বেন তারা সুবিধা পাবেন। 

সম্পূর্ণ হনুমান চালিশা বাংলা লিরিক্স Hanuman Chalisa in Bengali
সম্পূর্ণ হনুমান চালিশা বাংলা লিরিক্স ( Hanuman Chalisa in Bengali )

হরিহরন শ্রী হনুমান চল্লিশা

গায়ক হরিহরন ও গুলশান কুমার সমন্বিত ভাবে 1992 সালে শ্রী হনুমান চালিসার মিউজিক অডিও এবং  ভিডিও বানান , আর   অ্যালবামের সুপার ক্যাসেটস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দ্বারা প্রকাশ হয়। চন্দর এবং ললিত সেনকে সঙ্গীত সুরকার হিসেবে  অ্যালবাম এ কাজ করেন । Hariharan Shree Hanuman Chalisa র এই সংস্করণ টি  “T-Series Bhakti Sagar” এর  অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল এ পেয়ে যাবেন। 

  •  ভিডিওটি আজ অবধি ২০০ কোটির বেশি দেখেছেন এবং পছন্দ করেছেন। 
  • শ্রী হনুমান চালিসা গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন বিখ্যাত গায়ক হরিহরন।  
  • অ্যালবাম টি জানুয়ারী ১ লা জানুয়ারী ১৯৯২ প্রকাশিত হয়। এই গানটি ৯ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড এর গান ।
  • এই গান টি হিন্দি ভাষায় রিলিস হয়েছিল।  তবে বর্তমানে ১০ টির বেশি ভাষায় শ্রী হনুমান চালিসা  গাওয়া হয়েছে। 

উপসংহার

শ্রী হনুমান চালিশা বাংলা মন্ত্র পাঠ ও ২১ টি শক্তিশালী উপকারিতা ( Hanuman Chalisa in Bengali) সম্পর্কে আপনার মতামত কমেন্টে জানান।

হনুমান চালিশা বাংলা ভাষায় পিডিএফ

Hanuman chalisa in bengali mp3

আপনার কাছ থেকে আরো ৫ সেকেন্ড চাইছি এই আর্টিকেল টি শেয়ার করার জন্য।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।